শিক্ষাঙ্গন

শিক্ষা খাতে স্বল্প বাজেট: কাজে আসছে না দেশের উচ্চশিক্ষা, বাড়ছে বেকারত্ব

ফয়সাল আহমেদ

১৯২১ সালে ঢাকায় সর্বপ্রথম উচ্চশিক্ষা প্রদানে প্রতিষ্ঠিত হয় দেশের সুপ্রাচীন ও স্বনামধন্য বিদ্যাপিঠ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি)। এরপর ১৯৫৩ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি), ১৯৬১ সালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি), ১৯৬২ সালে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), ১৯৬৬-তে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ও ১৯৭০ সালে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) প্রতিষ্ঠিত হয়। শিক্ষার আলোয় আলোকিতকরণ ও দক্ষ মানবসম্পদ তৈরির তাগিদে স্বাধীনতার পূর্বে দেশে মোট ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলেও বর্তমানে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫৮টিতে। উচ্চশিক্ষা প্রদানে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে দেড় শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয় বিদ্যমান থাকলেও; এসব বিদ্যাপিঠগুলোতে প্রকৃত কর্মমূখী শিক্ষায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরিতে ব্যর্থ বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

বিশেষজ্ঞদের ভাষ্য, বাংলাদেশে শিক্ষার মান ২০ বছর পূর্বে যা ছিল; তা বৃদ্ধির বদলে উল্টো কমেছে। শিক্ষায় স্বল্প বাজেটের বরাদ্দ, বরাদ্দকৃত বাজেটের সিংহভাগ অবকাঠামোগত উন্নয়নের পেছনে ব্যয়, উদ্ভাবন খাতে বরাদ্দে অনীহা, অদক্ষ শিক্ষক নিয়োগ, আধুনিক ল্যাবের ঘাটতি ও গবেষণায় অনীহা, সভা-সেমিনার, নাচ-গান ও বিতর্ক অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে বিল উত্তোলনসহ নানান দূর্নীতির কারণে দিন দিন বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ছে। শিক্ষা খাতে যথসামান্য বরাদ্দ ও সুষম বন্টন না হওয়াটাও একটি মূখ্য বিষয় বলে দুষছেন বিশেষজ্ঞরা। এদেশে বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষার পরিবর্তে ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী কলা, বাণিজ্য ও সামাজিক অনুষদের শিক্ষায় শিক্ষিত। কিন্তু এসব বিষয়ে দেশে নেই পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান; নেই প্রয়োগবিধি। এতে কাজে আসছে না দেশের উচ্চশিক্ষা। বরং সাধারণ শিক্ষার চেয়ে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষায় ছাত্রদের শিক্ষিত করতে পারলে দেশে বেকারত্বের হার যেমন কমবে; তেমনি তৈরি হবে দক্ষ জনবল বলে মনে করছেন শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞগণ।

অ্যাকশন এইড বাংলাদেশ ও সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) এক জরিপে বলা হয়, বাংলাদেশে যুবগোষ্ঠীর বড় অংশ আর্থ-সামাজিক ঝুঁঁকির মধ্যে আছে। বৈষম্য আর গুণগত শিক্ষার অভাবে ৭৮ শতাংশ তরুণ মনে করেন, পড়াশোনা করে তারা চাকরি পাবেন না, গরিব শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে এ হার ৯০ শতাংশ। চাকরি, পড়াশোনা বা প্রশিক্ষণে নেই ২৯ দশমিক ৮ শতাংশ তরুণের।

২০১৯ সালে বাংলাদেশউন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) এক গবেষণায় দেখা যায়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত কলেজগুলো থেকে পাস করা শিক্ষার্থীদের ৬৬ শতাংশ অর্থাৎ দুই-তৃতীয়াংশই বেকার থাকছেন। ২১ শতাংশ শিক্ষার্থী স্নাতক কিংবা স্নাতকোত্তর শেষ করে চাকরি পান। ৭ শতাংশ শিক্ষার্থী এখনো অন্য কোনো বিষয়ে স্নাতকোত্তর বা কারিগরি শিক্ষা গ্রহণ করছেন কিংবা প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। তিন শতাংশ স্ব-উদ্যোগে কিছু করলেও তা দীর্ঘস্থায়ী কর্মসংস্থান হিসেবে ধরে রাখতে পারছেন না। এসব শিক্ষিত যুবকদের মধ্যে সম্পূর্ণ বেকার ৩৩.৩২ শতাংশ। বাকিদের মধ্যে ৪৭.৭ শতাংশ সার্বক্ষণিক চাকরিতে, ১৮.১ শতাংশ পার্টটাইম বা খÐকালীন কাজে নিয়োজিত।

দেশে শিক্ষত বেকারের সংখ্যা কত তা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) জরিপে বলা হয়নি। তবে গত বছরের আগস্টে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ ( টিআইবি) জানায় দেশে শিক্ষিত জনগোষ্ঠীর শকতরা ৪৭ ভাগ বেকার। ওই বছর একই সময়ে আইএলও জানায় বাংলাদেশি তরুণদের বেকারত্বের হার ১০.৬ শতাংশ, যদিও জাতীয় পর্যায়ের বেকারত্বের হার তখন ছিলো মাত্র ৪.২ শতাংশ। বিবিএসের ডিজিটাল জনশুমারি ও গৃহগণনার প্রতিবেদনের তথ্যানুসারে, দেশের ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী তরুণের সংখ্যা তিন কোটি ১৫ লাখ ৬১ হাজার ৮১১ জন। যা মোট জনসংখ্যার ১৯ দশমিক ১১ শতাংশ। সর্বশেষ তথ্যানুসারে, দেশে এখন বেকারের সংখ্যা ২৫ লাখ। এই বেকারদের মধ্যে ১৬ লাখ ৭০ হাজার পুরুষ আর আট লাখ ৩০ হাজার নারী। এই হিসাব চলতি বছরের এপ্রিল-জুন প্রান্তিকের। আগের প্রান্তিক জানুয়ারি-মার্চ মাসে দেশে বেকারের সংখ্যা ছিলো ২৬ লাখ ৩০ হাজার। বিশ্লেষকেরা আরও জানান, বেকারত্বেও এই হিসেব পদ্ধতিতে গলদ রয়েছে। এর বাইরে বাংলাদেশে প্রচুর ছদ্ম বেকার আছে। তাদের কর্মজীবী হিসেবেই দেখানো হয়। এছাড়া যারা কাজে আছেন তাদের বড় একটি অংশের আয় খুবই কম।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে প্রাপ্ত সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যা ১৫৮টিতে উন্নীত হয়েছে (সরকারি-৫৪, বেসরকারি- ১০৪)। এ সকল প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৪ লাখ ৪১ হাজার ৭১৭ জন। এর মধ্যে কলা ও মানবিকে ৪১.৯৬ শতাংশ, সামাজিক বিজ্ঞানে ২৫.৮৪ শতাংশ, বাণিজ্যে ১৯ শতাংশ, আইন বিষয়ে ০.২৯ শতাংশ ও শিক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়ে ২.৮০ শতাংশ শিক্ষার্থী অধ্যায়নরত। অপরদিকে বিজ্ঞান বিষয়ে ৮.১৬ শতাংশ, চিকিৎসা বিজ্ঞানে ০.২৭ শতাংশ, কৃষি বিজ্ঞানে ০.৬৫ শতাংশ ও প্রকৌশল ও প্রযুক্তি তথা কারিগরি বিজ্ঞান বিষয়ে ১.৭৫ শতাংশ অধ্যায়নরত। সবমিলিয়ে সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষা পাচ্ছে ৮৯.৭১ শতাংশ শিক্ষার্থী ও বাকি ১০.২৯ শতাংশ শিক্ষার্থী শিক্ষা পাচ্ছে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি বিষয়ে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের একটি প্রতিবেদন সূত্রে দেখা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ ছিল ৪৯ হাজার ১০কোটি টাকা যা মোট বাজেটের মাত্র ২.৪৯ শতাংশ। ২০১৭-১৮ সালে তা কমে দাঁড়ায় ২.২৬ শতাংশ। পরবর্তী চার বছর তা ক্রমান্বয়ে কমে ২.০৮ থেকে ২.১০ শতাংশে দাঁড়ায়। পরের বছর অর্থাৎ ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রায় ০.৩০ শতাংশ কমে দাঁড়ায় ১.৮৩ শতাংশে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরে বাংলাদেশের শিক্ষা খাতে জাতীয় বাজেটের বরাদ্দ আরও হ্রাস পায়। মাত্র ১.৭৬ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ হয়েছে সা¤প্রতিক অর্থ বছরে যা গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে কম।

আবার শিক্ষা খাতের বাজেট সমন্বিতকরণের ক্ষেত্রে দেখা গেছে বরাদ্দের হিংশভাগ অর্থ ব্যয় হয় কলা, মানবিক ও ব্যবসা বিভাগের বিষয়গুলোতে। অন্যদিকে, বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি বিষয়ে অধ্যায়নরত শিক্ষার্থীদের পেছনে ব্যয় হয় যথসামান্য। সূত্র জানায়, ২০১৮ অর্থ বছরে শিক্ষা খাতের বরাদ্দকৃত অর্থের মধ্যে ৯০.৯৬ শতাংশ ব্যয় হয়েছে সাধারণ শিক্ষায়। অন্যদিকে মাত্র ৯.০৪ শতাংশ ব্যয় হয়েছে বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষায়। ২০১৯ অর্থ বছরে সাধারণ শিক্ষায় ৭৮.৪৩ শতাংশ ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে ২১.৫৭ শতাংশ ও ২০২০ সালে সাধারণ শিক্ষায় ৭৯.৪০ শতাংশ ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে ২০.৬০ শতাংশ। তবে ২০২১ সালে সাধারণ শিক্ষায় বরাদ্দ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৮৪.১৪ শতাংশ এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে বরাদ্দ কমে দাঁড়ায় ১৫.৮৬ শতাংশ। তবে ২০২২ সালে সরকার শিক্ষার মানোন্নয়নে কারিগরি ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তিগত শিক্ষার উপর কিছুটা গুরুত্ব দেওয়ায় এ অর্থ বছরে সাধারণ শিক্ষায় বরাদ্দ কমিয়ে ৭৫.৮৪ শতাংশে আনা হয় এবং বিজ্ঞান ও কারিগরি শিক্ষায় বরাদ্দের পরিমাণ বাড়িয়ে ২৪.১৬ শতাংশে এনে কিছুটা সমন্বয় করা হয়।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুসারে, জিডিপির শতাংশ হিসেবে বাংলাদেশের (১.৭৬ শতাংশ) গড় শিক্ষা ব্যয় আফগানিস্থান, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে কম। অন্যান্য, স্বল্পোন্নত দেশগুলোর মধ্যে মিয়ানমার জিডিপির ২.১ শতাংশ, কঙ্গো ও উগান্ডা ২.২ শতাংশ, চাঁদ ২.৫ শতাংশ, কম্বোডিয়া ২.৬ শতাংশ, রুয়ান্ডা ৩.৩ শতাংশ, সেনেগাল, ইথিওপিয়া ৫.১ শতাংশ ও সিয়েরা-লিওন ৬.৭ শতাংশ ব্যয় করে শিক্ষাখাতে। অন্যদিকে, ভুটান ২০২১ সালে জিডিপির ৭.০ শতাংশ, ভারত ২০২০ সালে ৪.৫ শতাংশ, পাকিস্থান ২০২১ সালে ২.৪ শতাংশ, মালদ্বীপ ২০২০ সালে ৫.৮ শতাংশ, নেপাল ২০২০ সালে ৪.২ শতাংশ, শ্রীলঙ্কা ২০১৯ সালে ১.৯ শতাংশ ও আফগানিস্থান ২০১৯ সালে ২.৯ শতাংশ ব্যয় করেছে শিক্ষাখাতে করেছে।

দেশের স্বনাধন্য গবেষক, শিক্ষাবিদ ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফিশারীজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন বলেন, আমাদের দেশে সঠিক স্থানে সঠিক বরাদ্দ নেই। যেমন ২০২২ সালে শিক্ষায় যে বরাদ্দ ছিল তার মধ্যে সাধারণ শিক্ষায় ৭১ হাজার ৯৫৩ কোটি টাকা। আর বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি বিষয়ের ক্ষেত্রে ছিল ৪৩ হাজার ২৭২ কোটি টাকা। অথচ, বর্তমানে বিশ্বের প্রতিটি দেশ এখন তাদের শিক্ষায় বিজ্ঞান-প্রযুক্তি ও কারিগরি বিষয়কে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিচ্ছে। কিন্তু আমরা তার উল্টো টা করছি। যার কারণে শিক্ষায় কোন উন্নতি নেই।

তিনি আরও বলেন, গত দু’বছর গবেষণা খাতে কোন ব্যয় নেই। অথচ, বিশ্বের বিভিন্ন দেশ চাইছে দক্ষ জনবল। এক্ষেত্রে আমাদের যথেষ্ট সুযোগ রয়েছে; ওইসব দেশে দক্ষ জনবল প্রেরণের মাধ্যমে রেমিটেন্স আদায় করার। কিন্তু আমরা শিক্ষার মানদন্ডই ঠিক নেই। দেশকে এগিয়ে নিতে সবার আগে প্রয়োজন দেশের শিক্ষা নীতির পরিমার্জন। শিক্ষা ব্যবস্থায় বিজ্ঞান, গবেষণা, প্রযুক্তি ও কারিগরি বিষয়গুলোকে প্রাধান্য না দিলে বেকারত্ব বাড়বে বয় কমবে না এবং শিক্ষার্থীদের অর্জিত সার্টিফিকেটেরও কোন মূল্য থাকবে না।

জানতে চাইলে রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ২০৩০ সালে রয়েছে সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোল (এসডিজি) ও ২০৪১ সালে ভিশন রয়েছে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা। এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে অনতিবিলম্বে দেশের প্রাইমারি, হাইস্কুল, কলেজের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও কারিগরি শিক্ষায় অল্প অল্প করে দীক্ষা দেওয়া। পুঁথিগত বিদ্যা পড়ে কোন লাভ হবে না। হাতে কলমে শিক্ষা দিতে হবে। এক জমিতে তিন-চারটে উচ্চফলনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন করা, দেশের চিকিৎসা, প্রযুক্তি ও কারিগরি সেক্টরগুলোতে নতুন কিছু উদ্ভাবন করে বিশ্বে তাক লাগাতে হলে হাতে-কলমে শিখাতে হবে। বিজ্ঞান, চিকিৎসা ও কারিগরি প্রকৌশ শিক্ষায় যদি হায়েস্ট অর্ডারে বিনিয়োগ করা না হয় তবে আমাদের লক্ষ্যগুলো কোনদিনই অর্জিত হবে না। সুতরাং, দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে বলবো এই বিষয়েটিকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেবার জন্য।

অগ্নিবাণী/এফএ

Leave a Reply