মসজিদে বৈদ্যুতিক তার চুরির প্রতিবাদ করায় ইমামকে মারধর
ইফতেখার আলম বিশাল: রাজশাহী নগরীর ছোট বনগ্রাম এলাকায় মসজিদে বৈদ্যুতিক তার চুরির করায় কয়েকজন কিশোর ও তরুণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিলেন ইমাম মুফতি মামুনুর রশিদ (৩৫)। প্রতিবাদ কারণে উল্টো চোরদের হাতেই মারধরের শিকার হতে হয় তাঁকে।
মসজিদের ইমমাকে মারধরের ঘটনাটি ঘটেছে চন্দ্রিমা থানাধীন ছোট বনগ্রাম হেদায়েতুল আঞ্জুমান কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে। তবে আজ মঙ্গলবার (৫ এপ্রিল) দুপুরে জাগো নিউজকে এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন জামে মসজিদ কমিটির সদস্য জামাল উদ্দিন।
পরে জাগো নিউজের প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় মসজিদের নির্যাতিত ইমাম মামুমুর রশিদের সাথে। তিনি বলেন, গতকাল রবিবার (৪ এপ্রিল) সকাল ১০ টার দিকে মসজিদ ফাঁকা পেয়ে বিদ্যুতের তার কেটে নিয়ে যায় এলাকার এক কিশোর (৮), ইমন (১৬), শিশির (১৪) ও আকিবুল (১৮) নামের চারজন চোর। প্রায় ১৮ হাজার টাকার বৈদ্যুতিক তার তারা ৮০০ টাকায় কেজি দরে বিক্রি করে পাওয়ার হাউস মোড় এলাকার ভাংড়ি ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের কাছে।
মসজিদ কমিটির সদস্য জামাল উদ্দিন বলেন, তাদেরই (চোরদের) এক বন্ধু বৈদ্যুতিক তার চুরির বিষয়টি এসে গোপনে আমাদের জানায়। পরে মসজিদের হুজুর তাদের দেখতে পেয়ে এ জঘন্য কাজের প্রতিবাদ জানায়। পরে তাঁরা মসজিদের বাইরে হুজুরকে একা পেয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ তাকে মারধর করে।
তবে মারধরের বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে মসজিদের ইমাম মামুনুর রশিদ বলেন, তারা নাবালক, ছোট মানুষ। ভুল করেই অন্যায় কাজটি করেছে। আমি তাদের বুঝ দিতে গিয়েছিলাম। তাই তারা সামান্য খারাপ আচরণ করেছে আরকি।
এবিষয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, মসজিদ কমিটির লোকজন সহ থানা গিয়েছিলাম। তবে অপরাধীদের অভিভাবকরা মসজিদ কমিটির কাছে ক্ষতিপূরণ দিতে চেয়েছেন তাই অভিযোগ না করেই আসা হয়েছে। তাছাড়া রমজান মাস, আর মাফ করা নবীর সুন্নাত। তাই আমিও তাদের মাফ করে দিয়েছি।

এদিকে এলাকাবাসীর অভিযোগ, মিজানুর রহমান দীর্ঘদিন ধরে ছোট পাওয়ার হাউজ মোড়ে ভাংড়ির ব্যবসা করে আসছেন। তার অধিকাংশ ভাংড়ির মালামালই আসে সংঘবদ্ধ চোরের নিকট থেকে। এসব সংঘবদ্ধ চোর সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণকারীও তিনি। শহরে বিভিন্ন স্থানে চুরি যাওয়া মালামাল কম মূল্যে কেনেন তিনি।
এ বিষয়ে ভাংড়ি ব্যবসায়ী মিজানকে তার মুঠো ফোনে তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন এবং মারধরের হুমকি প্রদান করেন।
এ ব্যাপারে চন্দ্রিমা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. এমরান আলী বলেন, এ বিষয়ে থানায় মসজিদ কমিটি কিংবা নির্যাতনের শিকার ওই ইমামের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তাছাড়া সেসময় আমি থানায় ছিলাম না। শুনেছি এবিষয়ে তারা নিজেদের মধ্যে বসে মীমাংসা করে ফেলেছেন।
চোর সিন্ডিকেট নিয়ন্ত্রণকারী ভাংড়ি ব্যবসায়ীর বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি বলেন, এমন ঘটনা আমার জানা ছিল না। এমন কিছু ঘটে থাকলে তার বিরুদ্ধে অবশ্যই খোঁজ-খবর নিয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অগ্নিবাণী/এফএ