আজ থেকে রাজশাহীর বাজারে মিলবে গোপালভোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহী জেলা প্রশাসনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা ২০ মে (বৃহস্পতিবার) এর পূর্বেই রাজশাহীর বাজারে উঠেছিলো সুমিষ্ট ও সুস্বাদু গোপালভোগ আমের। সেই সাথে পাওয়া যাচ্ছে গুটি জাতের আম। তবে আজ থেকে (২০ মে) আনুষ্ঠানিকভাবে রাজশাহী বাজারে মিলবে গোপালভোগ আম।

চাষিদের ভাষ্য, অতি বৃষ্টি ও গরমের কারণে গোপালভোগ আম সময়ের আগেই গাছে পেকেছে। আর তাই, প্রশাসনকে অবহিত করেই গাছ থেকে আম নামিয়ে তা বাজারজাতকরণ করা হচ্ছে। আজ (২০ মে) থেকে গোপালভোগ আম বাজারে আসায় বেচাকেনাও বেড়েছে বলে দাবি আম চাষি ও ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে বাজারে গোপালভোগ আম মিলছে ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা প্রতি মণ। তবে সপ্তাহ খানেক পর এই দাম বেড়ে ২৫০০ থেকে ৩০০০ হাজার টাকায় দাড়াবে বলে জানিয়েছেন আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা।

এদিকে জেলা প্রশাসন কতৃপক্ষ বলছেন, ভোক্তাদের কাছে খুব সহজে পরিপক্ক ও ফরমালিনমুক্ত আম বাজারে সরবরাহ নিশ্চিত করতে আম পাড়ার সময় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছিল। নির্দেশনা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার (২০ মে) থেকে গোপালভোগ আম পাড়তে পারবেন চাষিরা। এতে গুটি আমের পাশাপাশি কাল থেকেই বাজারে মিলবে রাজশাহীর সুমিষ্ট গোপালভোগ।

তবে, আবহাওয়াজনিত কারণে কিছু কিছু গাছে আম তাড়াতাাড়ি পেকে যাচ্ছে। এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিতকরণের মাধ্যমে নিজ নিজ এলাকার আম চাষি ও ব্যবসায়ীরা নামাতে পারবেন।

এছাড়াও আগামী ২৫ মে থেকে লক্ষণভোগ, লখনা ও রাণীপছন্দ আম পাড়া যাবে। অন্যদিকে হিমসাগর, ক্ষিরসাপাত জাতের আম আরও তিন দিন পর (২৮ মে) থেকে পাড়তে পারবেন চাষিরা। ল্যাংড়া নামানো যাবে ৬ জুন থেকে। ১৫ জুন থেকে নামবে আম্রপালি ও ফজলি আম। আর মৌসুমের শেষে ১০ জুলাই নামতে শুরু করবে আশ্বিনা ও বারি আম-৪। এ ছাড়া রঙিন আম খ্যাত বারি আম-১৪ নামবে জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহের দিকে।

রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল বলেন, ‘নিরাপদ ও বিষমুক্ত আম উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ, পরিবহন এবং ভোক্তা পর্যায়ে বিপণনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে প্রত্যেক উপজেলায় আলাদা আলাদা কমিটি দায়িত্ব পালন করছে। জনসচেতনতা সৃষ্টি ছাড়াও বিধিনিষেধ অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘নির্ধারিত সময়ের আগে কোনোভাবেই অপরিপক্ক আম সংগ্রহ কিংবা বাজারে তোলা যাবে না। আম পাকানো ও সংরক্ষণ বা বাজারজাতে কোনো কেমিক্যাল মেশানো যাবে না। আমে ভেজাল ঠেকাতে পরিবহনের আগে এই অঞ্চলের সবচেয়ে বড় আমের বাজার পুঠিয়ার বানেশ্বরেও থাকছে বিশেষ নজরদারি।

আজ থেকে রাজশাহীর বাজারে মিলবে গোপালভোগ

আম কিনতে বাজারে যেতে ক্রেতাদের নিরুৎসাহিতকরণে জেলা প্রশাসনের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘চলমান করোনা পরিস্থিতিতে মানুষ ঘরবন্দি। এই অবস্থায় ঘরে ঘরে আম পৌঁছে দিতে ই-কমার্সভিত্তিক আম কেনাবেচায় জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। তারপরও কেউ বাজারে গেলে অবশ্যই তাকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।’

রাজশাহী ফল গবেষণা কেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আলিম উদ্দিন জানান, এবার খরায় আমের গুটি ঝরে গেছে। এ ছাড়া এখন কালবৈশাখীর মৌসুম। কিছু পরিপক্ক আমও ঝরে গেছে। তবুও এবার আমের ফলন মোটামুটি ভালোই হয়েছে।’

তিনি জানান, গুটি আম আগেভাগেই পাকে। আঁশযুক্ত এই আমের স্বাদ কিছুটা কম, তাই চাহিদাও কম। জনপ্রিয় সব জাতের আম পরিপক্ব হয় মে মাসের তৃতীয় সপ্তাহের পর থেকে। একে একে গোপালভোগ, লক্ষণভোগ, লখনা, রাণীপছন্দ, হিমসাগর, ক্ষিরসাপাত, ল্যাংড়া আম্রপালি, ফজলি, আশ্বিনা এবং বারি আম-৪, বারি আম-১৪ নামবে। আমের আসল স্বাদ পেতে তিনি পরিপক্ক আম কেনার পরামর্শ দেন ভোক্তাদের।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Tweet about this on Twitter
Twitter
Pin on Pinterest
Pinterest

Leave a Reply

Your email address will not be published.