রাজশাহীতে আম পাড়ার সময় বেধে দিলেন জেলা প্রশাসন

রাজশাহী প্রতিনিধি, রাজশাহী

বাজারে নিরাপদ ও পরিপক্ব আম নিশ্চিত করতে এবারো গাছ থেকে আম নামানোর সময় বেঁধে দিল রাজশাহী জেলা প্রশাসন। বৃহস্পতিবার (৬ মে) কৃষিবিদ, ফল গবেষক, চাষি ও ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সভা করে জেলা প্রশাসন আম নামানোর তারিখ নির্ধারণ করে।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে ভার্চুয়ালি এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে দুপুর সাড়ে ৩ টায় গণমাধ্যমের সাথে আম নামানোর বিষয়ে মতবিনিময় করেন রাজশাহী জেলা প্রশাসক।

সংশ্লিষ্ট সকলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, জাত অনুযায়ী গত বছরে যেভাবে গাছ থেকে আম নামানো শুরু হয়েছিল, এবারও সেই সময়সূচীই নির্ধারণ করেছে জেলা প্রশাসন।

এর মধ্যে সব ধরনের গুটি জাতের আম নামানো যাবে আগামী ১৫ মে থেকে। আর উন্নতজাতের আমগুলোর মধ্যে গোপালভোগ ২০ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা ও রাণীপছন্দ ২৫ মে এবং হিমসাগর বা খিরসাপাত ২৮ মে থেকে নামিয়ে হাটে তুলতে পারবেন বাগানমালিক ও চাষিরা।

এছাড়া ৬ জুন থেকে ল্যাংড়া, ১৫ জুন থেকে ফজলি ও আম্রপালি এবং ১০ জুলাই থেকে আশি^না ও বারি আম-৪ নামানো যাবে। নির্ধারিত সময়ের আগে আম বাজারে পেলে ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন। তবে কারও বাগানে নির্ধারিত সময়ের আগেই আম পাকলে তা প্রশাসনকে অবহিত করতে হবে।

ভুার্চুয়াল সভা শেষে জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল তাঁর কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, বাজারে পরিপক্ব ও নিরাপদ আম নিশ্চিত করতে প্রতিবছরই রাজশাহীতে তারিখ নির্ধারণ করা হয়। এবারও সংশ্লিষ্ট সবার মতামতের ভিত্তিতে তারিখ ঠিক করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক আরও জানান, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের মধ্যে আমের বাজারগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করার বিষয়টিও সভায় আলোচিত হয়েছে। হাটগুলোতে সার্বক্ষণিক পুলিশ থাকবে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং সহকারী কমিশনাররাও বিষয়টি দেখভাল করবেন।

রাজশাহীতে সবচেয়ে বড় আমের হাট বসে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ^রে। এছাড়া পুঠিয়ার বানেশ^র, বাঘার আড়ানী, মনিগ্রাম, বাউসা ও পাকুড়িয়া এবং মোহনপুরের কামারপাড়ায় পাইকারী আমের হাট বসে। হাটগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনকে ইতোমধ্যে প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহীতে এ বছর ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান আছে। গত বছর ১৭ হাজার ৫৭৩ হেক্টর জমিতে আমবাগান ছিল। এবার বাগান বেড়েছে ৩৭৩ হেক্টর জমিতে। এ বছর হেক্টর প্রতি ১১ দশমিক ৯ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে জেলায় এ বছর মোট দুই লাখ ১৯ হাজার মেট্রিক টন আম উৎপাদন হবে। তবে খরার কারণে এবার আমের ফলন কমে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।

আম নামানো ও আইন মান্যের বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসক মো. আব্দুল জলিল বলেন, ‘অধিক ফলন ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চয়তার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী গত বছর থেকে আমের নামানোর বিষয়ে একটি সময়সীমা বেধে দেওয়ার নির্দেশ দেন আমাদের। যে আম যেই সময় পরিপক্ক হয় তখন সেটাই নামানো হচ্ছে। এতে কৃষি ও কৃষক উভয়ই লাভবান হচ্ছেন। তবে কেউ যদি অধিক লাভের আশায় পূর্বেই বাগান থেকে আম নামান সেক্ষেত্রে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

রাজশাহীর বাইরে থেকে আসা আম বেপারিদের যাতায়াত ও হোটেলে রাত্রি যাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবিষয়ে খুব শীঘ্রই হোটেল ব্যবসায়ী ও আম ব্যবসায়ীদের সাথে একটি মিটিং করা হবে। তবে রাজশাহীতে আম নিতে আসা বেপারীদের নিরাপত্তা ও অন্যান্য বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে।’

অগ্নিবাণী/এফএ

এই সংবাদটি শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Tweet about this on Twitter
Twitter
Pin on Pinterest
Pinterest

Leave a Reply

Your email address will not be published.