আগুনে পুড়ে ছাই হলো ২ কোটি টাকার পানের বরজ!
নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজশাহীর দুর্গাপুরে প্রায় ১৫ বিঘা জমির পানের বরজে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এতে ৯ জন কৃষকের ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২ কোটি টাকার সম্পদ। পান বরজের আগুন নেভাতে গিয়ে মো. ইব্রাহিম নামের এক কৃষক হয়েছেন দগ্ধ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
শুক্রবার (২ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার গোপালপুর নামুপাড়া গ্রামের একটি পান বরজে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।
ঘটনার সম্পর্কে জানতে ফোন দেওয়া হয় পান বরজের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক মো. বাবুকে। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‘জুম্মার নামাজ পড়ে বাসায় খেতে বসেছিলাম। খাবার শেষ হতে না হতেই পাশের এলাকার আমজাদ হোসেন এসে জানায় আমাদের পানের বরজে আগুন লেগেছে। খবর পেয়ে দৌড়ে ঘটনাস্থলে যায়। সঙ্গে সঙ্গে দুর্গাপুর ফায়ার সার্ভিসে ফোন দেয়। সেখান থেকে ফায়ার সার্ভিসের দুইটি ইউনিট প্রায় দেড় ঘণ্টা ধরে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। পরে আগুন নিভে গেলেও ততক্ষণে পান বরজ পুরে ছাই হয়ে যায়। এতে ক্ষতি হয় প্রায় কোটির টাকার উর্ধ্বে।’
তিনি বলেন, ‘প্রায় ১৫ বিঘার জমিতে ৯ জন কৃষক মিলে আবাদ করতেন। আগুন লাগায় আমাদের বিশাল ক্ষতি হয়ে গেলো।’
দুর্গাপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার আশরাফুল রহমান বলেন, ‘দুপুর ২টার দিকে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা চেষ্টার পর বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।’
তিনি বলেন, ‘কৃষকদের মনের অবস্থা স্বাভাবিক না থাকায় তারা সঠিক ক্ষতির পরিমাণ বলতে পারেননি। তবে স্থানীয়রা বলছেন পান ও পানের বরজসহ প্রায় দুই কোটি টাকার মতন ক্ষতি হয়েছে ওই নয় কৃষকের। তবে আগুন নিয়ন্ত্রণে না আনতে পারলে পার্শ্ববর্তী আরও প্রায় ২০ বিঘা জমির পানের বরজের ক্ষতি হতো।’

কিভাবে পান বরজে আগুন লেগেছে তা কেউ-ই বলতে পারছে না। তবে ধারণা করা হচ্ছে পরিত্যক্ত সিগারেট বা বিড়ি জাতীয় আগুন থেকে দূর্ঘটনার সূত্রপাত হতে পারে বলে জানিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম।
এবিষয়ে নওপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আগুন লাগার সময় আমি ঘটনাস্থলে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত উপস্থিত ছিলাম। আমিই ফায়ার সার্ভিসকে ফোন করে আসতে বলি। দূর্ঘটনার স্বীকার পরিবারের অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এব্যাপারে সন্ধার দিকে সকল মেম্বারদের নিয়ে বসে ইউএনও এর কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্যের বিষয়ে আবেদন জানানো হবে।’
এদিকে দূর্গাপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মহসিন মৃধা বলছেন, ‘আগুন লাগার বিষয়টি শুনেছি। সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করার সুযোগ আছে। আমি জেলা প্রশাসক বিষয়টি অবহিতকরণের মাধ্যমে তাদের পাশে দাড়ানোর বিষয়ে আলোচনা করব। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে যা যা করণীয় রয়েছে তা করা হবে।’
অগ্নিবাণী/এফএ