বছেরর প্রথম দিনে বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত রাজশাহীর শিক্ষার্থীরা
ফয়সাল আহমেদ, রাজশাহী
করোনায় পুরো বিশ্ব থমকে গেলেও থেমে থাকেনি মানুষের জীবন-যাপন। ঠিক তেমনি চলমান শিক্ষা ব্যবস্থাও যেনো স্থবির না হয়ে পড়ে সেই লক্ষ্য মাত্রায় সরকার বছরের প্রথমদিনেই শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেওয়ার অঙ্গীকার করে। এর বাস্তব চিত্র ফুটে উঠে সারাদেশে। রাজশাহীতে নতুন বছরের প্রথম দিনেই প্রতিটি বিদ্যালয়ে কমলমতি শিক্ষার্থীদের হাতে বিনামূল্যে নতুন বই তুলে দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, করোনাভাইরাসের কারণে অন্যান্য বছরের মতো বই উৎসব না হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণিকক্ষেই এ বই বিতরণ কার্যক্রম করা হয়েছে। এই মহামারীকালেও নতুন বই পেয়ে উচ্ছ্বসিত রাজশাহীর শিক্ষার্থীরা। তাছাড়া নিজ বিদ্যালয়ে দীর্ঘ দিন পর সহপাঠীদের দেখা পেয়ে এক আনন্দ উচ্ছ্বাসের দেখা মেলে তাদের মাঝে।
ছুটির দিন সত্ত্বেও স্কুলগুলোতে বই বিতরণ করা হয়। রাজশাহী সরকারি পিএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করছেন শিক্ষকরা।
স্কুলের শিক্ষার্থী সানজিদা বলে, করোনার এই সময়ে নতুন বই পাবো তা ভাবতেই পারিনি। স্কুলে এসে অনেক দিন পরে বন্ধুদের সাথে দেখা হয়েছে। সেই সাথে নতুন বই পেয়েছি। অনেক ভালো লাগছে।
স্কুলের আরেক শিক্ষার্থী নিলুফার ইয়াসমিন বলে, করোনা মহামারিতে আমরা দীর্ঘ সময় বাসায় বন্দি ছিলাম। শিক্ষক ও স্কুলের বন্ধুদের সবাইকে খুব মিস করছিলাম। আজ নতুন বছরে সবার সাথে দেখা হয়েছে। সাথে নতুন বই পেয়েছি। অনুভূতিটা বলে বোঝাতে পারব না।
সরকারি পিএন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকা তৌহিদ আরা বলেন, ২০২১ সালে বাচ্চাদের হাতে আমরা যে নতুন বই দিতে পারব এটা যেমন বাচ্চারা ভাবতে পারেনি তেমনি আমরাও ভাবতেও পারিনি। এত প্রতিকূলতা স্বত্বেও বাচ্চাদের বই দেয়ায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের এখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নতুন বই বিতরণের কার্যক্রম করা হয়েছে।
রাজশাহী জেলায় ১ হাজার ৫৭টি প্রাথমিক স্কুলের প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে মোট ১৩ লাখ ৮৯ হাজার ৫৭৬ বই। এর মধ্যে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে এসে পৌঁছেছে ১৩ লাখ ৪ হাজার বই। মাধ্যমিকের সকল স্তরের শিক্ষার্থীদের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৪৪ লাখ ১৯ হাজার ২৯৮ বই। এর মধ্যে জেলা শিক্ষা অফিসে এসে পৌঁছেছে মাত্র ১১ লাখ ২১ হাজার ২৮৬ বই। আগামি ১২ দিনের মধ্যে স্কুলে সব বই পৌঁছে যাবে বলে জানিয়েছেন শিক্ষা কর্মকর্তারা।
বলছেন, যেদিন থেকে বর্তমান সরকার বিনা মূল্যে বই বিতরণ শুরু করেছে সেদিন থেকেই বছরের প্রথম দিনেই বই বিতরণ কার্যক্রম চলছে। আর সেটি বন্ধ বা ছুটির দিনই হোক না কেনো। রাজশাহীর রিভার ভিউ কালেকটরেট স্কুলে বই পরিদর্শন করতে গিয়ে দেখলাম, সেখানে চক পাউডার দিয়ে সুন্দর করে সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা হয়েছে। ঠিক তেমনি পিএন বালিকা বিদ্যালয়, স্যাটেলাইট বালিকা বিদ্যালয়, রাজশাহী মসজিদ মিশন একাডেমি, মেডিকেল কলেজ ক্যাম্পাস স্কুলেও এমন চিত্রের দেখা মেলে। মূলত শিক্ষার্থীদের শিক্ষা কার্যক্রম নিশ্চিত করা এবং বছরের প্রথম দিনে বই বিতরণ করে তাদের মনকে উচ্ছ্বসিত করাই মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যে।