কাঁটাতারের বেড়াও মানছে না রোহিঙ্গারা
অনলাইন ডেস্ক
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪ টি ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা নাগরিকদের চলাচল নিয়ন্ত্রণে আনতে না পারায় দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে তারা। এছাড়া কতিপয় দালালদের সহায়তায় এসব রোহিঙ্গারা বিদেশ পর্যন্ত গমন করছে। এই ব্যাপারে সচেতনমহলে দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবী উঠেছে।
এদিকে রোহিঙ্গা নিয়ন্ত্রনের জন্য কুতুপালং, বালুখালী ক্যাম্পসহ অনেক ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া দিলেও তা মানছে না রোহিঙ্গারা। তারা প্রতিনিয়ত কাঁটাতারের বেড়া ফাঁক গলে ও উপর দিয়ে বের হয়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
সরজমিন বালুখালী ক্যাম্প ৮ এ গিয়ে দেখা যায়, ক্যাম্পের চারদিক কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে ফেলা হলেও কিছু কিছু রোহিঙ্গা দিনদুপুরে কাঁটাতারের বেড়া ফাঁক গলে ও উপর দিয়ে প্রতিনিয়ত বের হয়ে যাচ্ছে। পাশাপাশি কাঁটাতারের বেড়ার ভেতরে স্থানীয় অনেকের বাড়ি ঘর থাকায় তারা বেকায়দায় পড়েছে। কারণ চলাচলের রাস্তা না থাকায় বাড়ি থেকে বাজারে যেতে কষ্ট হচ্ছে বলে স্থানীয় কয়েকজন জানান।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পুরাতন রোহিঙ্গা এবং ২০১৭ সালে অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা উখিয়ার ২৬টি এবং টেকনাফের ৮ টি শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় নেয়। সরকারী ও বেসরকারী সংস্থাসমুহ তাদের খাদ্য, স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাসহ যাবতীয় ব্যয়ভার বহন করে আসছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী অক্লান্ত পরিশ্রম করে সার্বিক নিরাপত্তা দিয়ে আসছে। রোহিঙ্গাদের বেপরোয়া চলাচল নিয়ন্ত্রণ এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দমনের জন্য কয়েকটি ক্যাম্পে কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তবে রোহিঙ্গারা এসব আইন-কানুনের তোয়াক্কা না করেই যত্রতত্র গমন করে দেশের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে বসতি গড়ছে। যা আগামীতে দেশের জন্য ভয়াবহ পরিস্থিতি ধারণ করবে বলে আশঙ্কা অনেকের।
এছাড়া এসব রোহিঙ্গাদের একাংশ চুরি-ডাকাতি, ছিনতাই, মাদক কারবার, অপহরণ ও মুক্তিপণসহ নানা অপকর্মে লিপ্ত থেকে ক্যাম্প সমুহকে অস্থির করে তুলছে। অবশিষ্ট রোহিঙ্গাদের কিছু অংশ দুর সম্পর্কের আত্মীয়, ধর্মীয় জ্ঞাতি ভাইয়ের দোহাই দিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে পড়ছে।
অন্য একটি অংশ স্থানীয় দালাল প্রকৃতির লোকজনের সহায়তায় জন্ম নিবন্ধন এবং জাতীয়তার সনদ নকল করে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন দেশে গমন করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তারাই বিদেশে বসে বিভিন্ন সংস্থার নিকট থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে উগ্রপন্থী সংগঠনের তহবিল যোগান দিচ্ছে বলেও জনশ্রুতি রয়েছে। তাই এসব রোহিঙ্গা নাগরিকদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণের দাবী উঠেছে স্থানীয়ভাবে।
এই ব্যাপারে কক্সবাজার ১৬এপিবিএন পুলিশের অধিনায়ক এসপি হেমায়তুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, এসব ক্যাম্পের যত্রতত্র প্রবেশ ও বহিরাগমন বন্ধে দুই স্তর বিশিষ্ট কাঁটা তারের বেড়া তৈরী করা দরকার। এছাড়া ক্যাম্পের মাঝি-ভলান্টিয়ারদের সহযোগিতার পাশাপাশি আইন-শৃংখলা বাহিনীর টহল জোরদার করতে হবে। তাছাড়া পর্যবেক্ষণ টাওয়ার স্থাপিত হলে রোহিঙ্গাদের বেপরোয়া চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
রোহিঙ্গাদের জন্মনিবন্ধন, জাতীয়তা সনদ সংগ্রহ, জমি-জমা ক্রয়তে সহায়তা এবং বিদেশ গমনে সহায়তায় লিপ্তদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ পেলে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে আইন-শৃংখলা বাহিনীর বিশ্বস্ত সুত্র নিশ্চিত করেছেন। সূত্র: সময়ের আলো