পাবনা-৪ উপনির্বাচনে মা নয়, ছেলে গালিব-ই যোগ্য প্রার্থী

পাবনা প্রতিনিধি

কে হবেন পাবনা-৪ আসনের আগামীর সাংসদ? ঈশ্বরদী তথা পাবনার চায়ের দোকান থেকে হাটে-ঘাটে বাজারে এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনমনে দেখে মিলেছে ব্যাপক কৌতুহল। পাবনা-৪ (ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়া) আসনে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রয়াত এমপি ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফের পরিবারের সদস্য দাবি করে দলীয় মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন ৬ জন।

তারা হলেন- প্রয়াত সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রী ঈশ্বরদী উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামরুন্নাহার শরিফ, ছেলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য গালিবুর রহমান শরিফ, মেয়ে পাবনা জেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাহজেবিন শিরিপন পিয়া, মেয়ের জামাই ঈশ্বরদী পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি পৌর মেয়র আবুল কালাম আজাদ মিন্টু, খালাতো ভাই প্রয়াত মন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী বশির আহমেদ বকুল ও ভাগ্নি জামাই সুপ্রিমকোট আইনজীবী হাবিবুর রহমান হাবিব।

এদের মধ্যে চারজনই ওই পরিবারের কেউ নয় বলে দাবি করেছেন প্রয়াত সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ছোট ভাই ভাই লক্ষ্মীকুন্ডা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও লক্ষ্মীকুন্ডা ইউপি চেয়ারম্যান আনিসুর রহমান শরিফ।

আজ সোমবার বিকেলে মুঠোফোনে প্রয়াত এমপি সাবেক ভূমিমন্ত্রীর পরিবারের পক্ষ থেকে ছোট ভাই আনিসুর রহমান শরিফ বলেন, বিয়ের পর মেয়ে কখনোই বাবার পরিবারের সদস্য থাকতে পারে না। সেখানে মেয়ের জামাই, কিংবা খালাতো ভাই এবং ভাগ্নে জামাই কিভাবে পরিবারের সদস্য হয় তা আমার বোধগম্য নয়। ৬ জনকে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর পরিবারের সদস্য উল্লেখ করে বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। এসব নিউজে আমরা অসন্তোষ ও বিব্রতবোধ করছি।

তিনি আরো বলেন, আমাদের পরিবার থেকে দুজন ফরম উত্তোলন করেছেন। একজন হলেন প্রয়াত এমপির স্ত্রী কামরুন্নাহার শরিফ। আর অন্যজন হলেন ছেলে গালিবুর রহমান শরিফ। কামরুন্নাহার শরিফ বয়োবৃদ্ধ। তাই পরিবারের একমাত্র যোগ্য প্রার্থী গালিবুর রহমান শরিফ।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, পাঁচবারের এমপি সাবেক মন্ত্রী শামসুর রহমান শরিফ ডিলুর বার্ধক্যজনিত মৃত্যুর কারণে আসনটিতে আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর উপ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার তফসিল ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন। আসনটিতে দীর্ঘকাল ধরে একক রাজনৈতিক আধিপত্য ছিলো প্রয়াত এমপি ডিলুর। এই কারণে বারবার তার সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেও দলীয় মনোনয়ন পাননি অন্যরা। কিন্তু এবার তার শুন্যতায় ওইসব প্রতিদ্বন্দ্বীরা এবার সেই সুযোগ পেয়েছেন। সেই কারণে একযোগে দলীয় মনোনয়ন লাভের আশায় ২৬ জন মনোনয়ন ফরম উত্তোলন করেছেন। তবে এতো প্রার্থীর ভিড়ে আসল ও যোগ্য প্রার্থী হিসেবে ইতিমধ্যেই জনগণের নিকট প্রয়াত এমপির পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলে গালিবুর রহমান শরিফকেই পছন্দ করা হয়েছে বলে ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগ সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রগুলো আরো জানায়, প্রয়াত এমপি ডিলুর দুই উপজেলায় রেখে যাওয়া অসমাপ্ত কাজগুলো ছেলে গালিবকে দিয়েই সমাপ্ত করা সম্ভব। তাই পরিবার ও দুই উপজেলার আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ছাত্রলীগ ও বিভিন্ন সহযোগী সংগঠনের পক্ষ থেকে স্ত্রী কামরুন্নাহার শরিফকে নয় ছেলে গালিবুর রহমান শরিফকে প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দেওয়া হয়েছে।

ঈশ্বরদী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মকলেছুর রহমান মিন্টু জানান, প্রয়াত এমপি শামসুর রহমান শরিফ ডিলুর ছেলে গালিবুর রহমান শরিফ একজন উচ্চ শিক্ষিত। সুস্থ মস্তিস্কের রাজনৈতিক বিচক্ষণশীল ব্যক্তি। বাবার মৃত্যুর পর ঈশ্বরদী-আটঘড়িয়ায় আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যে শুন্যতা সৃষ্টি হয়েছিল তা গালিব বিচক্ষণতার সঙ্গে পূরণ করতে সক্ষম হয়েছেন। দুই উপজেলার দলীয় নেতা-কর্মীদের নিকট রাজনৈতিক আস্থার প্রতিকে পরিণত হয়েছেন। তাই দলীয় নেতা-কর্মীদের দাবির প্রেক্ষাপটে আমরা গালিবুর রহমান শরিফকে পরিবারের মধ্যে যোগ্য একমাত্র প্রার্থী হিসেবে সমর্থন দিয়েছি।

মিন্টু আরো বলেন, এমনকি ঈশ্বরদী ও আটঘড়িয়া উপজেলার বিভিন্ন চেয়ারম্যানরাও উপনির্বাচনে প্রার্থী হিসেবে গালিবকেই সমর্থন দিয়েছেন।

এই সংবাদটি শেয়ার করুন
Share on Facebook
Facebook
Tweet about this on Twitter
Twitter
Pin on Pinterest
Pinterest

Leave a Reply

Your email address will not be published.