রাজশাহী

বিএমডিএ’র কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গোপনে শতাধিক গাছ বিক্রির অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী

রাজশাহীর তানোরের দুটি সড়কে থাকা গাছ মরা ও ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে গোপনে নিলামে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) তানোর জোনের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, কাগজে-কলমে বিক্রি গাছের সংখ্যা ৪১ বলা হলেও নিলামকারীরা কেটেছেন শতাধিক গাছ। বিএমডিএ কর্মকর্তার যোগসাজশে ঘটেছে বেশি গাছ কাটার পুরো কারবার। শতাধিক গাছ কত টাকায় বিক্রি করা হয়েছে তাও গোপন করা হয়েছে নিলাম আদেশপত্রে। এদিকে অভিযোগ পেয়ে ঘটনা তদন্ত করছে বিএমডিএর নির্বাহী পরিচালকের দপ্তর। নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, তদন্ত প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এলাকাবাসীর অভিযোগে জানা গেছে, গাছ বিক্রিতে অনিয়ম ও দুর্নীতিকারী কর্মকর্তার নাম কামরুজ্জামান। তিনি বিএমডিএর তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী। সম্প্রতি তানোর উপজেলার মুন্ডুমালা পৌরসভার পাঁচন্দর মোড় থেকে সোনামুখী কালিন্দর প্রকাশনগর ও দুবইল থেকে প্রকাশনগর সড়কের দুই পার্শ্বের শতাধিক তাজা শিশু গাছ কাটা হয়েছে।

এসব গাছ বিএমডিএ রোপণ করে কয়েক বছর আগে। অভিযোগ মতে, সরকারি গাছ বিক্রি বা নিলামের আগে প্রকাশ্যে নোটিশ জারি ছাড়াও মাইকিং করে এলাকায় ব্যাপক প্রচারের নিয়ম রয়েছে। পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রচারেরও নিয়ম আছে। কিন্তু গাছগুলো বিক্রি করা হয়েছে গোপনে ক্রেতাদের সঙ্গে পূর্ব পরিকল্পনা ও যোগসাজশ মোতাবেক। কাগজে-কলমে শুধু সোনামুখী কালিন্দর সড়কের গাছ নিলাম দেখানো হলেও দুবইল সড়কের গাছও কাটা হয়েছে বেশকিছু।

এদিকে বিএমডিএ প্রকৌশলী তার নিলামপত্রে বলেছেন, ১৮ অক্টোবর সকালে প্রকাশ্যে ৪১টি গাছ সর্বোচ্চ দামে নিলাম করা হয়েছে। নিলামপত্রের তথ্যানুযায়ী কাগজে-কলমে ৪১টি গাছ নিলামে বিক্রি দেখানো হয়েছে রাজশাহী কোর্ট এলাকার বকুল মিয়া ও তানোর উপজেলার জিওল এলাকার কাঠ মিল ব্যবসায়ী আব্দুর রাজ্জাকের কাছে। এর মধ্যে ২১টি শিশু গাছ দেওয়া হয়েছে বকুল মিয়াকে ও বাকি ২০টি গাছ দেওয়া হয়েছে আব্দুর রাজ্জাককে। ১৮ অক্টোবর নিলামপত্র জারির পরদিন থেকেই ক্রেতারা গাছগুলো দ্রুত কেটে সরিয়ে নেন।

প্রকাশনগর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, বিএমডিএ গাছগুলো মরা ও যানবাহন চলাচলে ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ করলেও অধিকাংশ গাছই সবুজ ও তাজা ছিল। গাছগুলো কেটে দ্রুত সেগুলোর গোড়া মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে, যাতে কেউ বুঝতে না পারে সেখানে আগে গাছ ছিল। অন্যদিকে শুধু সোনামুখী কালিন্দর সড়কের গাছ নিলাম নিয়ে সঙ্গে দুবইল সড়কের গাছ কাটা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে নিলামকারী বকুল মিয়া বলেন, বরেন্দ্র অফিসে কথা বলেন। আমাদের যেভাবে বলেছে আমরা সেভাবেই কেটেছি। আরেক নিলামকারী আব্দুর রাজ্জাক কথা বলতে রাজি হননি।

এদিকে গাছ বিক্রিতে অনিয়মের অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে বিএমডিএর তানোর জোনের সহকারী প্রকৌশলী কামরুজ্জামান সাংবাদিক পরিচয় জেনেই ফোন কেটে দেন। পরে আর ফোন ধরেননি। তবে নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রশিদ বলেন, গাছ কাটার বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অগ্নিবাণী/এফএ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *